জাবেদা শেখার সহজ নিয়ম ও ব্যাখ্যাসহ

হিসাববিজ্ঞানের দুই তরফা নিয়ম অনুসরণ (ডেবিট ও ক্রেডিট) নির্ণয় করা তাদের ব্যাখ্যা সহ আর্থিক পরিমাণের সমতা রেখে যে বইতে লিপিবদ্ধ করা হয়, তাকেই মূলত জাবেদা বলে।

জাবেদা শেখার সহজ নিয়ম ও ব্যাখ্যাসহ

আজকে আমরা জানব, জাবেদা শেখার সহজ উপায় সমূহ অর্থাৎ জাবেদা শেখার নিয়ম সম্পর্কে জানব।

ধাপ-১: পক্ষ সনাক্তকরণ - জাবেদা শেখার সহজ উপায়

জাবেদা শিখতে সর্বপ্রথম আপনাকে লেনদেনের দুটি পক্ষ থাকে, এই পক্ষগুলো কি, এবং এর শ্রেণিবিন্যাস কি হবে, তা সনাক্ত করতে হবে।

যেমন : আসবাবপত্র ক্রয় করা হয় ৩০,০০০ টাকা। এই লেনদেনটির দুটি পক্ষ হল "আসবাবপত্র", "নগদান হিসাব"। আবার : বিক্রয়ের উদ্দেশ্য আসবাবপত্র ক্রয় ৮০,০০০ টাকা। এই লেনদেনটির পক্ষ দুটি হবে "ক্রয় হিসাব" ও "নগদান হিসাব"।

কারণ যদি কোন কিছু ব্যবহারের জন্য কিনলে, সেটি সম্পদ। তাই ১ম লেনদেন এ "আসবাবপত্র" হবে। আবার যদি বিক্রিয় এর উদ্দেশ্য ক্রয় করে সেটি সম্পদ হবেনা। ব্যয় হিসাব অর্থাৎ ক্রয় হিসাব হবে।

ধাপ-২ : ডেবিট/ক্রেডিট নির্ণয় - জাবেদা শেখার সহজ উপায়

ধাপ-১ এর সনাক্ত করা দুই বা ততোধিক পক্ষকে দুই তরফা (ডেবিট ও ক্রেডিট) হিসাবে নির্ণয় করা। এখন দুটি পক্ষের একটি পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করলে নিশ্চিত আরেকটি পক্ষ সুবিধা ত্যাগ করতে হবে। যে পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করবে সেটি ডেবিট ও যে পক্ষ সুবিধা ত্যাগ করতে হবে সেটি ক্রেডিট।

যেমন: উপরের ১ম উদাহারণের যখন আসবাবপত্র ক্রয় করেছে তখন "আসবাবপত্র" ব্যবসায়ে এসেছে। তাই এটি সুবিধা। তাই "আসবাবপত্র হিসাব -- ডেবিট" ও "নগদান হিসাব ক্রেডিট" কারণ: নগদ অর্থ ত্যাগ (দিয়ে) দিতে হয়েছে। তাই নগদান হিসাব ক্রেডিট।

ধাপ-৩ : অর্থিক সমতা - জাবেদা শেখার সহজ উপায়

দুই বা ততোধিক পক্ষ সমূহের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয়ের পর এই আর্থিক পরিমান সমান বা উভয় পক্ষে একই হতে হবে।

নিচে একটি উদাহারণে তা দেখানো হল

উদাহারণঃ
১. পণ্য বিক্রয় করা হল ৩০০০ টাকা।
২. রহিম ট্রেডার্স হতে ২০০০০ টাকার পন্য ক্রয়, যার ৪০% নগদে পরিশোধ করা হয়েছে।

লেনদেনগুলোর জাবেদা দাখিলা হবে

তাঃ বিবরণ ডেবিট টাকা ক্রেডিট টাকা
১. নগদান হিসাব -- ডেবিট
বিক্রয় হিসাব-- ক্রেডিট
৩,০০০
৩,০০০
২.
ক্রয় হিসাব -- ডেবিট
নগদান হিসাব -- ক্রেডিট
রহিম ট্রেডার্স (পাওনাদার) -- ক্রেডিট
২০,০০০

৮,০০০
১২,০০০

উপরের ২নং উদাহারণে তিনটি পক্ষ থাকলেও ডেবিট দিকের ২০,০০০ টাকা ও ক্রেডিট দিকের টাকা ২০,০০০ উভয়ই সমান হতে হবে।

কতগুলো জাবেদার উদাহরণ

লেনদেনঃ
১. বিদ্যুৎ বিল প্রদান করা হয় ১৫০০ টাকা।

লেনদেনটির জাবেদা দাখিলা হবে

তাঃ বিবরণ ডেবিট টাকা ক্রেডিট টাকা
১. বিদ্যুৎ বিল হিসাব -- ডেবিট
নগদান হিসাব-- ক্রেডিট
১৫০০
১৫০০

লেনদেনঃ
১. ব্যাংক হতে উত্তোলন ২০০০০ টাকা।

লেনদেনটির জাবেদা দাখিলা হবে

তাঃ বিবরণ ডেবিট টাকা ক্রেডিট টাকা
১. নগদান হিসাব -- ডেবিট
ব্যাংক হিসাব -- ক্রেডিট
২০,০০০
২০,০০০

লেনদেনঃ
৩. মালিকের ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে পণ্য উত্তোলন ১৪০০ টাকা।

লেনদেনটির জাবেদা দাখিলা হবে

তাঃ বিবরণ ডেবিট টাকা ক্রেডিট টাকা
৩. উত্তোলন হিসাব -- ডেবিট
ক্রয় হিসাব-- ক্রেডিট
১৪০০
১৪০০

ব্যাখ্যা : ব্যবসা হতে মালিক নেজের প্রয়োজনে কিছু উত্তোলন করলে উত্তোলন ডেবিট। আর যে যেটি উত্তোলন করা হয় (নগদ, ব্যাংক, পন্য) সেটি ক্রেডিট হবে। তাই এখানে পন্য উত্তোলন করেছে তাই ক্রয় হিসব ক্রেডিট হয়েছে। উত্তোলন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url