জাবেদা কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?

কোন লেনদেন সংগঠিত হওয়ার সাথে সাথে হিসাববিজ্ঞানের প্রথম ধাপ হল লেনদেনটি আর্থিক নাকি অনার্থিক তা শনাক্ত করা। যদি আর্থিক লেনদেন হয়ে থাকে তাহলে ঐ লেনদেনটি লিপিবদ্ধ করতে হবে। যে বইয়ে লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয় তাকেই জাবেদা বলা বই বলা হয়। 

জাবেদা কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?

জাবেদা কাকে বলে? 

কোন লেনদেন সংগঠিত হওয়ার পর লেনদেনের বিবরণসহ ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষে যে বইতে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকেই জাবেদা বলে।

প্রত্যেকটি লেনদেন সংগঠিত হওয়ার সাথেই সাথেই লেনদেনের বিবরণ ও ব্যাখ্যা সহ ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষে সম পরিমাণ আর্থ দ্বারা যে বইতে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকেই জাবেদা বলে। কিন্তু জাবেদায় শুধুমাত্র ঐ লেনদেনটি লিপিবদ্ধ হবে যেটি ব্যবসায়ে আর্থিক প্রভাব বা পরিবর্তন করে।

উদাহারণ সরূপ : কর্মচারীর বেতন প্রদান করা হল ১২০০০ টাকা। এটি ব্যবসায়ের আর্থিক পরিবর্তন (নগদ অর্থ চলে গেছে) হয়েছে্। তাই এটি জাবেদাই লিপিবদ্ধ হবে। আবার, ২০,০০০ টাকার বেতনে একজন ম্যানেজার নিয়োগ করা হল্। এটি লেনদেন নয় তাই জাবেদায় লিপিবদ্ধ হবে না। কারণ ম্যানেজার নিয়োগ দিছে এখনো কোন আর্থিক পরিবর্তন হয়নি।

জাবেদা কেন হিসাববিজ্ঞানের প্রাথমিক বই?

জাবেদাকে বলা হয় হিসাববিজ্ঞানের প্রথমিক বই। অর্থাৎ জাবেদা ছারা হিসাববিজ্ঞানের অন্য কোন প্রক্রিয়া (রেওয়ামিল, খতিয়ান, কার্যপ্রত্র, নগদান বই, আর্থিক অবস্খার বিবরণী ) সম্পন্ন করা সম্ভব না।

আরো সহজভাবে বললে, এই বইয়ের (জাবেদা বই) উপর ভিত্তি করে হিসাববিজ্ঞানের অন্যান্য সকল হিসাব বা পক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে, তাই জাবেদা কে হিসাববিজ্ঞনের প্রাথমিক বলা হয়।

জাবেদার গুরুত্ব বা কেন প্রয়োজন

যেহেতু জাবেদার উপর ভিত্তি করেই হিসাববিজ্ঞানের অন্যান্য সকল ধাপ করা হয়, তাই জাবেদা খুবই গুগুত্বপূর্ণ।

  • লেনদেনের সঠিক লিপিবদ্ধকরণ: লেনদেন গঠিত হওয়ার সাথে সাথে লেনদেনটি এই জাবেদা বইয়ে লিপিবদ্ধ হয়, তাই ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
  • লেনদেনের নির্ভুল শ্রেণিবদ্ধকরণ: প্রতিটি লেনদেন এর ডেবিট ও ক্রেডিট হিসাবে লিপিবদ্ধ করা হয় তাই হিসাববিজ্ঞানের পরবর্তি ধাপের জন্য এই জাবেদা খুবই প্রয়জন।
  • আর্থিক সমতা : ডেবিট ও ক্রেডিট হিসাবে সমান পরিমাণ টাকা লিপিবদ্ধ করাই, পরবর্তি ধাপে জটিলতা এড়ানো যায়।
  • ভুলত্রুটি হ্রাস: জাবেদায় লিপিবদ্ধ করায় ভুল ত্রুটি অনেক হ্রাস করা যায়।

জাবেদা কত প্রকার ও কি কি

জাবেদাকে সাধারণত দুইভাগে ভাগ করা হয়। তা হল

  • বিশেষ জাবেদা
  • প্রকৃত / সাধারণ জাবেদা

বিশেষ জাবেদা কাকে বলে :

বিশেষ জাবেদা হল কোন বিশেষ লেনদেন বা নির্দিষ্ট লেনদেন এর জন্য যে জাবেদা বই তৈরি করা হয় তাকেই বিশেষ জাবেদা বলে। যেমন: একটি প্রতিষ্ঠানের শুধু মাত্র যে সকল ক্রয় বাকীতে হয়েছে সেগুলো একটি বইতে লিপিবদ্ধ করা হলে সেটি বিশেষ জাবেদা।

নির্দিষ্ট কিছু হিসাবের জন্য বিশেষ জাবেদা তৈরি করা হয়, তা হল।

  • ক্রয় জাবেদা
  • বিক্রয় জাবেদা
  • ক্রয় ফেরত জাবেদা
  • বিক্রয় ফেরত জাবেদা
  • নগদ প্রাপ্তি জাবেদা
  • নগদ প্রদান জাবেদা

প্রকৃত / সাধারণ জাবেদা

কোন নির্দিষ্ট বা বিশেষ কোন হিসাবের জন্য না করে কিংবা বিশেষ জাবেদা ব্যাতিত অন্য কোন জাবেদা করে থাকলে তাকেই সাধারণ বা প্রকৃত জাবেদা বলে। প্রকৃত জাবেদায় কতগুলো শ্রেণিবিভাগ হল

  • সংশোধনী জাবেদা
  • সমন্বয় জাবেদা
  • সমাপনি জাবেদা
  • প্রারম্ভিক জাবেদা
  • অন্যান্য জাবেদা

সাধারণ জাবেদা করার নিয়ম

সাধারণ জাবেদায় প্রতিটি লেনদেন কে দুই তরফা নিয়ম অনুসারে ডেবিট ও ক্রেডিট করা হয়। এই ডেবিট ও ক্রেডিট করে ও লেনদেনের পরিমাণ সমান করার মাধ্যমেই সাধারণ বা প্রকৃত জাবেদা করা হয়।

নিচে একটি উদাহারণ দেওয়া হল।

উদাহারণঃ
১. পণ্য বিক্রয় করা হল ৩০০০ টাকা।
২. কর্মচারীর বেতন প্রদান ১২০০০ টাকা।

লেনদেনগুলোর জাবেদা দাখিলা হবে

তাঃ বিবরণ ডেবিট টাকা ক্রেডিট টাকা
১. নগদান হিসাব -- ডেবিট
বিক্রয় হিসাব-- ক্রেডিট
৩,০০০
৩,০০০
২. বেতন হিসাব -- ডেবিট
নগদান হিসাব -- ক্রেডিট
১২,০০০
১২,০০০
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url