খতিয়ান কি এবং কাকে বলে -- খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত করণ

একটি বয়বসা প্রতিষ্ঠানের সকল হিসাব, পৃথক বিবরণীতে সংরক্ষণ করাই হল খতিয়ান।

খতিয়ান কি এবং কাকে বলে -- খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত করণ

অর্থাৎ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনেক ধরনের হিসাব থাকতে পারে, যেমন নগদ হিসাব, ক্রয় হিসাব, বিক্রয় হিসাব, খরচ হিসাব আরো অনেক ধরণের হিসাব থাকতে পারে। এই সবগুলো হিসাবের পৃথক পৃথক উদ্ধৃত পাওয়ার জন্য, যে বিবরণী তৈরি করা হয় তাকেই খতিয়ান বলে।

খতিয়ান কি বা কাকে বলে তা উদাহারনের সাহায্য জানা যাক

ধরুন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নগদান হিসাব বা নগদ অর্থের জন্য একটি হিসাব রয়েছে। এখন ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সকল নগদ প্রাপ্তি ও প্রদান হিসাব করে, আর কত টাকা ব্যবসায়ে আছে তা জানার জন্য খতিয়ান করতে হবে।

খতিয়ানের সুবিধা ও বৈশিষ্ট্য

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেকটি হিসাবের জন্য খতিয়ান করা বাধ্যতা মুলক। এই খতিয়ান এর মাধ্যমে ব্যবসাশে নগদ অর্থ, ব্যাংক, দায়, সম্পদ কত আছে তা বিশুদ্ধ ভাবে নির্ণয় করা যায়।

খতিয়ানের বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা সমূহ হল

  • খতিয়ানের মাধ্যমে ব্যবসায়ের সকল হিসাবের উদ্ধৃত পাওয়া যায়।
  • খতিয়ান হল হিসাব বইয়ের চুড়ান্ত বই।
  • প্রত্যেকটি হিসাবের জন্য পৃথক বিবরণী ব্যবহার করা হয়৷
  • খতিয়ান বইয়ে প্রত্যেকটি লেনদেনের জাবেদা পৃষ্ঠা নম্বর থাকতে হবে।

খতিয়ান বইয়ে অন্তর্ভুক্তকরণ

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় খরচ এর উদ্ধৃত নির্ণয়ের জন্য খতিয়ান তৈরি করা হয়।
এই খতিয়ান বইয়ে দুইভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

  • T ছক
  • চলমান জের

T ছকে খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত করণ

T ছক হল খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত করণের একটি মাধ্যম। প্রত্যেকটি লেনদেন দুটি পক্ষ থাকে একটি পক্ষ ডেবিট একটি পক্ষ ক্রেডিট হয়। ডেবিট পক্ষকে বামপাশে ও ক্রেডিট পক্ষকে ডানপাশে অন্তর্ভুক্ত করে খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করায় হল T ছক।

T-ছকের একটি ঘর বা বিবরণী নিচে দেওয়া হল

খতিয়েন হিসাব
নগদান হিসাব
ডেবিট
ক্রেডিট
তারিখ বিবরণ টাকা জাঃ পৃঃ টাকা তারিখ বিবরণ টাকা জাঃ পৃঃ টাকা
০৪ মার্চ ২৩ বিক্রয় হিসাব ১২,০০০

T ছক এ খতিয়ান হিসাবের উদ্ধৃত নির্ণয়

T ছকে একপাশে ঐ হিসাবের ডেবিট লেনদনগুলো বামপাশে ডেবিট পাশে বসবে আবার ক্রেডিট হলে ক্রেডিট পাশে বসবে। এখন ডেবিট আর ক্রেডিট পাশের টাকার ব্যবধান হল ঐ হিসাবের উদ্ধৃত।

উদাহারণঃ সরূপ ধরুন একটি ব্যবসায়ের নগাদান হিসাব এর মোট ডেভিড পাশে টাকা ১২০,০০০ ও ক্রেডিট পাশের টাকা ৬৫,০০০ টাকা। এখন ডেবিট পাশে ১২০,০০০-৬৫,০০০ = ৫৫,০০০ টাকা উদ্ধৃত রয়েছে যা ডেভিড পাশে (ডেভিড পাশের টাকা বড়).

চলমান জের -- খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত করণ

T ছকের মত ডেভিড ও ক্রেডিট পাশ আলাদা না করে। প্রত্যেকটি লেনদেন অন্তর্ভুক্ত (ডেভিড ও ক্রেডিট) করে সাথে সাথে উদ্ধৃত নির্ণয় করাকে চলমান জের বলে।

অর্থাৎ লেনদেন অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সাথে সাথে উদ্ধৃত নির্ণয় করাকেই চলমান জের বলে।

একটি চলমান জেরের নমুনা চক

খতিয়ান কি এবং কাকে বলে

উদাহারণ সরূপঃ ধরুন আপনি চলমান জের এর মাধ্যমে নগদান হিসাব করতেছেন। এখন আপনি নগদান হিসাব ডেভিড হল ৪০,০০০ টাকা। এখন এর পরের লেনদেনে আপনার নগদ টাকা ক্রেডিট হল ৪০০ টাকা। এখন আপনাকে উদ্ধৃত করতে বিয়োগ করতে হবে কারণ, আপনার আগে নগদ আসছিল পরের লেনদেনে নগদ ক্রেডিট মানে চলে গেছে তাই বিয়োগ করতে হবে। একই ভাবে ২য় লেনদেনটি যদি নগদ ডেবিট হত তাহলে ১ম লেনদেন ও ডেবিট তাই যোগ হয়ে উদ্ধৃতের কলামে বসবে।

অর্থাৎ যে লেনদেনটি করবেন তার আগের উদ্ধৃত সাথে যদি লেনদেনটির পক্ষ একই হল তাহলে যোগ (ডেবিট ডেবিট অথবা ক্রেডিট ক্রেডিট)। আর যদি বীপরিত হল বিয়োগ হয়ে ডেবিট বা ক্রেডিট এ (যেই পক্ষের টাকা বড়) উদ্ধৃত বসবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url