প্রারম্ভিক জাবেদা কি এবং প্রারম্ভিক জাবেদা করার নিয়ম
কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা নতুন ভাবে শুরু করলে, বা নতুন হিসাব কাল শুরুর দিন যে হিসাবগুলো হয়, সেগুলোর জাবেদা দাখিলা দেওয়াকে প্রারম্ভিক জাবেদা বলে।
প্রারম্ভিক জাবেদার ব্যাখ্যা
প্রতিটি ব্যবসায়ের তিনটি মূল ও প্রদান আর্থিক উপাদান হল সম্পাদ, দায়, মালিকানাস্বত্ব
প্রতিটি ব্যবসা শুরুর দিন অথবা হিসাব কালের শুরুর দিন এই তিনটি উপাদানের যে পরিমান (আর্থিক) নিয়ে ব্যবসা শুরু করা হয় তা জাবেদায় অন্তর্ভুক্ত বা তার জাবেদা দাখিলা দেওয়াকে প্রারম্ভিক জাবেদা দাখিলা বলে।
নির্দিষ্ট হিসাবকালের শেষে যে আর্থিক বিবরণী তৈরি করা হয়। তার উদ্ধৃতই হল পরবর্তী বছরের প্রারম্ভিক লেনদেন।
প্রারম্ভিক জাবেদার উদাহরণ
বিষয় আরো সহজভাবে একটি উদাহারণের সাহায্যে বোঝা যাক, ধরুন আপনার ব্যবসায়ের ২০২২ এর চুড়ান্ত বিবরণী (আর্থিক অবস্থার বিবরণী) তৈরি করলেন। আর আমরা জানি, আর্থিক অবস্থার বিবরণী তে আমরা সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব নির্ণয় করি।
এই ২০২২ এর মোট সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব যে পরিমাণ উদ্ধৃত থাকবে, তা ২০২৩ সালের ব্যবসা শুরুর দিন এর প্রারম্ভিক হবে।
তাহলে, যদি ব্যবসাটি নতুন হয়ে থাকলে, মালিক যা কিছু(সম্পদ, দায়) নিয়ে ব্যবসা শুরু করবে সব গুলোয় প্রারম্ভিক দাখিলায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
নিচে কিছু সমন্বয় জাবেদা দেওয়া হল
উদাহারণ-১ঃ করিম ট্রেডার্স ২০২৩ এ মোট ২,০০,০০০ টাকা নগদ, ৪০,০০০ টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ও ২০,০০০ টাকার আসবাবপত্র নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন।
লেনদেনটির প্রারম্ভিক জাবেদা হবে
তাঃ | বিবরণ | ডেবিট টাকা | ক্রেডিট টাকা |
---|---|---|---|
জানু-১ |
নগদান হিসাব -- ডেবিট
আসবাবপত্র হিসাব -- ডেবিট ব্যাংক ঋণ -- ক্রেডিট মূলধন হিসাব -- ক্রেডিট |
২,৪০,০০০
২০,০০০ |
৪০,০০০ ২,২০,০০০ |
উদাহরণ-১ এর প্রারম্ভিক জাবেদার ব্যাখ্যা
- নগদান হিসাব -- ডেবিট (২,৪০,০০০)
কিন্তু আপনি যদি নগদান হিসাব এর টাকা টা খেয়াল করেন তা হল ২,৪০,০০০ টাকা। প্রারম্ভিক জাবেদা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে যে হিসাব লিপিবদ্ধ হচ্ছে তার মোট উদ্ধৃত কত সেটা বসবে।
উপরের উদাহারন অনুযায়ী ২,৪০,০০০ টাকা নগদ ও ৪০,০০০ টাকা ব্যাংক ঋণ আনা হল যেটিও একটি ব্যবসায়ে নগদ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে তাই দুইটার যোগাফল (২,০০,০০০ + ৪০,০০০) = ২.৪০,০০০ টাকা নগদান হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
- আসবাবপত্র হিসাব -- ডেবিট (২০,০০০)
একইভাবে, ব্যবসায়ে মোট আসবাবপত্রের উদ্ধৃত বা পরিমাণ হল ২০,০০০ টাকা। আর যেহেতু এটিও ব্যবসায়ে সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে তাই সেটিও ব্যবসায়ে সুবিধা গ্রহন করেছে তাই ডেবিট হবে।
- ব্যাংক ঋণ -- ক্রেডিট (৪০,০০০)
যেহেতু ব্যাংক ঋণ হল ব্যবসায়ের জন্য দায়। তাই এটি ক্রেডিট হবে। কারণ প্রতিষ্ঠানের বা ব্যবসায়ের দায় বাড়লে সেটি ক্রেডিট অর্থাৎ সুবিধা ছেড়ে দিতে হবে।
- মূলধন হিসাব -- ক্রেডিট (২,২০,০০০)
মালিক যে পরিমান অর্থ বা সম্পদ এর যোগান দেয় সেটিই মুলধন। উদাহারণ-১ এ মালিক তার নিজ অর্থায়ন থেকে ২,০০,০০০ টাকা নগদ ও ২০,০০০ টাকার আসবাবপত্র আনে। সেগুলায় মুলধন (২,০০,০০০ + ২০,০০০) = ২,২০,০০০ টাকা।
জাবেদার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হল, ডেবিট ও ক্রেডিট কলামের টাকা সমান হতে হবে। উদাহারণ-১ এ ডেবিট কলামের ২,৪০,০০০ + ২০,০০০ = ২,৬০,০০০ টাকা। এবং ক্রেডিট কলামের টাকা হল ৪০,০০০ +২২০,০০ = ২,৬০,০০০ টাকা। যা ডেবিট ও ক্রেডিট কলামের টাকা পরিমাণ সমান।